হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার এতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শাকির মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়টি বেহাল অবস্থা। প্রতিষ্ঠার ৫০ বছরেও উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাবে জরাজীর্ণ পাকা ভবন ও টিনশেড ঘরে ঝুঁকি নিয়ে ছাত্র ছাত্রী-নিয়মিত ক্লাস করছে। চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে ৫ নং শানখলা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডে শাকির মোহাম্মদ মনোরম পরিবেশে অবস্থিত বিদ্যালয়টি। তারপাশে অবস্থিত শাকির মোহাম্মদ সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয় ও শাকির মোহাম্মদ বাজার জামে মসজিদ । একসময়ে অত্র এলাকায় শিক্ষা ও সভ্যতা বিকাশের একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল শাকির মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় । সারাদেশে যখন শিক্ষা সভ্যতার বিকাশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক তখনই অবহেলা দিন পার করছে শাকির মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়টি । একসময় অতএকায় ও আশেপাশে কোন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল না চুনারুঘাট উপজেলার পশ্চিম অঞ্চল শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ অঞ্চলে একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল শাকির মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় বিদ্যালয়টিতে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৮ শতাধিক ছাত্র ছাত্রী শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ কর্মরত কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ১৫ জন। বিদ্যালয়টি প্রতিবছরই অনুষ্ঠিত জিএস সি/ এস এস সি পরীক্ষার ফলাফল বেশ সুনামের কুড়িয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিনের পুরনো শাকির মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়টির বেহাল অবস্থা বিদ্যালয়ের মুল পুরাতন ফাঁকা চারচালা টিনের ঘরটি বেঙ্গে পেলা হয়েছে। একটি নতুন বিল্ডিং হওয়ার আশায় বিদ্যালয়ে এর বহু পোড়ান মুল ফাঁকা ঘরটি বেঙ্গেপেলায় শ্রেণি কক্ষের সমস্যাটা আরও বেড়েছে । তবে নতুন বিল্ডিংয়ের কাজ কবেথেকে শুরু হবে এবং কবেই বা শেষ হবে কেউ জানেনা স্কুল কতৃপক্ষ এবিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ । শ্রেণীকক্ষে দরজা-জানালা থাকলেও তা ভাঙা। চেয়ার-টেবিলসহ বসার বেঞ্চ নষ্ট হয়ে গেছে। শিক্ষা উপকরণ, পাঠাগার ও খেলাধুলার সরঞ্জামের তীব্র সংকট রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে দুইটি মাত্র টয়লেট থাকলেও তা প্রায় ব্যবহারের অনুপযোগী। ফলে এ ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিড়ম্বনার শেষ নেই।
ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষার কোন পরিবেশ নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদানের জন্য ২টি আধপাকা একটি টিন শেডের ঘর একটি ফাঁকা ঘর আছে সেই ঘরটি ব্যাবহার হয় অফিস ও শিক্ষকদের জন্য বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে । এলাকায় বিশিষ্ট জনরা বলেন আমরা চাই সরকার ও স্থানীয় এলাকাবাসী শিক্ষার কার্যক্রমকে দ্রুত প্রসার ঘটাতে তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও এই বিদ্যালয়ে উন্নয়নের কোনো সরকারি অনুদান তেমন পাওয়া যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের হাতের ছোঁয়া প্রায় দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেগেছে। আমরা চাই প্রধামন্ত্রী উন্নয়নের ছোঁয়া যেন আমাদের প্রতিষ্ঠানে লাগে। বর্তমানে বিদ্যালয়টি পাঠদানের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে এই টিনের চালা দিয়ে পানি চুয়ে চুয়ে পড়ে। তারপরও শিক্ষকগণ অতিকষ্টে অধ্যায়নরত প্রায় ১২০০ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে পাঠদান চলিয়ে যাচ্ছেন। এ বিদ্যাপীঠ থেকে প্রতিবছর ছাত্র-ছাত্রীরা ভালো ফলাফল করে আসছে জিএসসি এসএসসিতে কিন্তু অবকাঠামোগত সমস্যা সমাধান করা না হলে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শ্রেণীকক্ষ সংকটের কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা ঝুঁকি নিয়েই জরাজীর্ণ এই ঘরে ক্লাস করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আক্ষেপ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন এলাকার নেতারা দীর্ঘদিনের পুরাতন এই বিদ্যালয়টির উন্নয়নের জন্য নজর দেনি। তিনি আরও বলেন আশেপাশে নতুন নতুন অনেক মাধ্যমিক বিদ্যালয় হয়েছে সেই গুলো উন্নয়ন হলেও শাকির মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের কোন উন্নয়ন হয়নি । এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।