শেখ মোঃ হুমায়ুন কবির, সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তার- মাওনা বাজার রোর্ডে অবস্থিত লাইফ কেয়ার হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলোনা, নার্স দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশনে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে এ সময় নিহতের স্বজনেরা এসে হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। প্রসূতির মৃত্যুর পরপরই হাসপাতালের মালিকপক্ষ, চিকিৎসক ও নার্স পালিয়ে গেছে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের বেশ কিছু সদস্য এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
(৩১’শে মার্চ ২০২৪) রবিবার রাত সাড়ে ৯:টায় দিকে লাইফ কেয়ার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী ইয়াসমিন আক্তার (৩০) উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রামের আসাদুল্লাহর স্ত্রী।
প্রসূতির মা রাজিয়া আক্তার অভিযোগ করে বলেন, দুপুর ১২:টার দিকে মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানায়, মাগরিবের নামাজের পরপরই সিজার করা হবে। এই বলে হাসপাতাল থেকে স্বজনদের বিদায় দেয়। শুধু তিনি হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন। বিকেল সাড়ে ৫:টার দিকে তাঁকে জানানো হয়, মেয়ের ছেলে সন্তান হয়েছে। দৌড়ে মেয়ের কাছে গিয়ে দেখেন প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তখন স্বজনদের খবর দেয়া তাঁরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। তাঁরা চিকিৎসককে অনুরোধ করলেও কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। রাত সাড়ে ৯:টার দিকে মেয়ের অবস্থার অবনতি হলে তাঁরা রেফার্ডের নাম করে অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ তুলে দিয়ে হাসপাতালের মালিক পক্ষ ডাক্তার ও নার্স পালিয়ে যান।
প্রসূতির মা রাজিয়া জানান, তাঁর মেয়ের নবজাতক শিশুপুত্র ও ইকরা নামে ১০ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।
প্রসূতির মামা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাত সাড়ে ৯:টায় দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখেন হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ রাখা। এরপর হাসপাতালে প্রবেশ করে দেখেন কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও মালিকপক্ষ পালিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কয়েক শতাধিক মানুষ হাসপাতালে শান্তিপূর্ণ ভাবে অবস্থান নিয়েছি। যতদূর জানতে পারছি, সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে সে সময় হাসপাতালে কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছিলো না। ডাক্তার ছাড়া নার্স দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করার কারণে আমার ভাগনি মারা গেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এই হাসপাতালে এর আগেও অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
লাইফ কেয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মোঃ পারভেজ হোসেনের ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে একাধিক বার কল করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। হাসপাতালে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।
শ্রীপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এনায়েত কবির জানান, হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশের বেশ কিছু সদস্য এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি। স্বজনদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতালে এসে কর্তৃপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। সবাই পালিয়ে গেছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
রাত ১২:টার পর শ্রীপুরের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা হাসপাতালে এসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।