লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি: আইনশৃঙ্খলা বাহিনী (ডিবি) পরিচয়ে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলা থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিনকে অপহরণ করার ৫ দিন পর রাজধানীর তেজগাঁও থানা এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আর অপহরণের সঙ্গে জড়িত ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, ৬ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পদোলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা (ডিবি) অপহরণ করে। ওই দিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে একটি কালো মাইক্রোবাস ও একটি সাদা প্রাইভেটকারে করে অজ্ঞাত ১২/১৩ জন তাদের বাড়ির সামনে আসে। তাদের মধ্যে একজন প্রধান প্রবেশদ্বারের দেয়ালে উঠে ঘরে প্রবেশ করে। এবং দরজা খোলা হলে বাইরে থাকা অন্যরা ঘরে ঢুকে প্রথমে ভিকটিমের ভাই রুহুল আমিনের বাড়িতে ঢুকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়। এরপর ভিকটিম নুরুল আমিন বাড়ি থেকে বের হলে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা রুহুলকে ছেড়ে দেয় এবং ভিকটিম নুরুল আমিনকে ধরে ফেলে। আর তাকে টেনে নিয়ে যায় চ্যাং দোল দিয়ে।
ভিকটিমের স্ত্রী মাহফুজা বেগম, ভাই রুহুল আমিনসহ বাড়িতে উপস্থিত অন্যদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা এসপি অফিসের বলে জানান। এ সময় পুলিশ ভিকটিমের ভাই রুহুল আমিন (৪০) ও চাচা আবু তালেব (৭০) ও ভিকটিমের ছেলের পরিচয়পত্র দেখতে চায়। ভিকটিমকে নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তারা কিছু না বলে ভিকটিমের চাচা আবু তালেব ও ভাই রুহুল আমিনকে মারধর করে। এবং জোরপূর্বক ভিকটিমকে গাড়িতে তুলে আদিতমারী হয়ে লালমনিরহাটের দিকে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে ভিকটিমের ছেলে বাদী হয়ে আদিতমারী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে মামলা দায়ের হলে আদিতমারী থানা পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধারে ব্যাপক তৎপরতা চালায়।
লালমনিরহাট জেলার পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল হকের সহযোগিতায় আদিতমারী থানার অফিসারদের একটি দল পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সমন্বয়ে গঠিত হয় ১১ জানুয়ারি আনুমানিক ০৩.৩০ টার দিকে ভিকটিম ও আসামীর অবস্থান শনাক্ত করে ইনচার্জ আদিতমারীর নেতৃত্বে ঢাকার তেজগাঁও থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয় এবং অপহরণের সঙ্গে জড়িত টাঙ্গাইলের গোপালপুরের মজিবর রহমানের ছেলে আব্দুল বারী (৪৩) ও নেত্রকোণার পূর্বধলার সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে শফিউল আলম নামে ২ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয় ।
পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ভিকটিম ও অপহরণকারীদের মধ্যে আগের টাকা লেনদেন থাকতে পারে। ঘটনার প্রকৃত রহস্য ও অপহরণের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান সাপেক্ষে আরও তদন্ত চলছে