শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন

গাইবান্ধা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সাঁওতাল পল্লীতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ক্রীড়া উৎসব

রানা ইস্কান্দার রহমান
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১২ মার্চ, ২০২২
  • ২৪৫ বার পঠিত

গাইবান্ধা জেলা ব্যুরো প্রধানঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল পল্লীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘সাঁওতাল সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া উৎসব’।

শুক্রবার নাগরিক সংগঠন ‘জনউদ্যোগ গাইবান্ধা’ ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘অবলম্বন’র আয়োজনে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের সাঁওতাল পল্লীর জয়পুর মাঠে এই উৎসব শুরু হয়।

সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য রক্ষায় রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়ে আয়োজিত এই সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া উৎসবে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মাদারপুর ও জয়পুরপাড়ার সাঁওতাল পল্লীর শতাধিক সাঁওতাল নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোর অংশগ্রহণ করে। উৎসবে খেলাধুলা, নাচ-গান, ছবি আঁকা ও তীর ছোঁড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পওে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী এবং অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

দিনভর নাচ-গান সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, খেলাধুলা, প্রতিযোগিতাসহ নানা ধরনের বিনোদনমূলক আয়োজনে অংশ নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন সাঁওতাল নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোররা। এসব আয়োজনে বিপুল সংখ্যক আদিবাসী-বাঙালী নারী-পুরুষও উপস্থিত ছিলেন। তারাও উপভোগ করেন দিনভর এই আয়োজন।

সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, জেলা বার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, জনউদ্যোগের সদস্য সচিব ও অবলম্বনের নির্বাহী পরিচালক প্রবীর চক্রবর্তী, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির তনু, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলার আহবায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, মানবাধিকার কর্মী অঞ্জলী রানী দেবী, ওমর হাবীব বাদশা, সনাকের সহ-সভাপতি অশোক সাহা, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু, আদিবাসী নেত্রী তৃষ্ণা মুর্মু, ব্রিটিশ সরেন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেলেও দেশে আদিবাসীদের নিজ মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের দাবি উপেক্ষিত হয়ে আসছে। ৫০টির মতো আদিবাসী গোষ্ঠীর ২০ লাখেরও বেশি শিশু ভুলতে বসেছে তাদের নিজস্ব ভাষাগত ঐতিহ্য, লোকগাথা,প্রবাদ-প্রবচন। মাতৃভাষায় অক্ষরজ্ঞান না থাকায় তাদের সংস্কৃতিও হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত।

তারা বলেন, একটি শিশুর স্বকীয়তা, সৃজনশীলতা, মননশীলতা ও মেধার বিকাশ হয় তার মাতৃভাষার মধ্য দিয়ে। তাই আদিবাসী শিশুদের এ দেশে সাধারণভাবে শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে থাকা হতদরিদ্র আদিবাসী গোষ্ঠীর প্রত্যেকেরই নিজস্ব ভাষা ও নিজ ভাষার বর্ণলিপি শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু চর্চার অভাবে এসব বর্ণমালার সবই এখন বিলুপ্তপ্রায়। ফলে নতুন প্রজন্মের আদিবাসীরা নিজ ভাষায় কথা বলতে পারলেও নিজস্ব ভাষায় তারা একেবারে নিরক্ষর। তাই আদিবাসীদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অবিলম্বে পাঠ্যপুস্তক, জেলায় আদিবাসী কালচারাল একাডেমি প্রতিষ্ঠাসহ তাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে রক্ষায় সরকারি উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Bangla Webs
banglawebs999991