জেলা ব্যুরো সিরাজগঞ্জঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে চিহ্নিত মাদক সম্রাট হেলাল হোসেন (৫২) ও তার সহযোগী সোবাহান (২২) র্যাবের হাতে আটক হওয়ায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে এলাকাবাসী। সোমবার (১৪ মার্চ) সকালে জেলার তাড়াশ উপজেলার মহিশলুটি বাজারে ওই আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেন।
জানা যায়, গত বুধবার সন্ধায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে উল্লাপাড়া উপজেলার ধোপাকান্দি গ্রামের হানিফ হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট এর সামনে থেকে তাদের ১৩৮ গ্রাম হেরোইন ও ২৯ পিচ ইয়াবাসহ আটক করে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১২।
ওই সময় ১টি প্রাইভেট কার, ৩টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৪৭ হাজার টাকা জব্দ করে হয়। হেলাল তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের ঘরগ্রাম পূর্বপাড়া এলাকার মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে ও তার সহযোগী সোবাহান ওই একই গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে। আটককৃত হেলাল দীর্ঘদিন যাবত মাদক ও সুদের ব্যবসার সাথে সাথে জড়িত ছিলেন।
এদিকে মাদক কারবারি হেলাল হোসেনের আটকের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। এবং আইনশৃংখলা বাহিনী র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১২ কে সাধুবাদ জানান তারা। এলাকাবাসীর অভিযোগ হেলাল মাদক, জুয়া ও সুদ কারবার করে রাতারাতি অঢেল সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। অপরদিকে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকার চেক মামলা করে নিঃস্ব করেছে শতাধিক পরিবার। সে মহিশলুটি তিনতলা অফিস বানিয়ে নিজেকে বড় ক্ষমতাধর প্রচার করে সেখান থেকে নানান অপকর্ম পরিচালনা করে আসছিলো।
স্থানীয় ভুক্তভোগী মাসুদ রানা কান্নাকন্ঠে অভিযোগ করে বলেন, হেলালের কাছ থেকে পারিবারিক প্রয়োজনে এক বছর পূর্বে ১০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলাম। তিনি আমার কাছ থেকে চারটি ফাঁকা চেক নিয়েছিলো। ২০ লক্ষ টাকা আমি দিলেও সে ওই চেকে ইচ্ছে মতো টাকার অঙ্ক বসিয়ে ১ কোটি ৯০ লক্ষ ১০ হাজার ৫’শ টাকার মামলা দায়ের করেছে। র্যাব তাকে আটক করায় আমরা সস্থি পেয়েছি। আমরা চাই প্রত্যেক অপরাধীর বিচার হোক।
একই অভিযোগ তুলে আব্দুল খালেক বিএসসি বলেন, মাদক ও সুদকারবারি হেলাল হোসেনের কাছ থেকে তিন দফায় ৫ লাখ টাকা নেই। বিনিময়ে তিনটি স্বাক্ষরযুক্ত সাদা চেক নেয়। সুদ আসল মিলে পরিশোধ করলেও আমার বিরুদ্ধে তিনি সিরাজগঞ্জ কোর্টে ২০লাখ টাকার মামলা করেছে।
স্থানীয় আকতার মাস্টার বলেন, হেলাল মাদক ও সুদের ব্যবসা করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছে। তাকে র্যাব আটক করায় এলাকায় স্বস্থি ফিরেছে। আমরা তার উপযুক্ত শাস্তিদাবি করছি।
র্যাব-১২’র মিডিয়া অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তাদের আটক করার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা দীর্ঘদিন যাবত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধনেশাজাতীয় মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিল। পরে সলঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়। মামলা নাম্বার ১৭/২০২২।
এ প্রসঙ্গে সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বৃহস্পতিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।