সিরাজগঞ্জে বেলকুচি উপজেলায় চাঞ্চল্যকর মা ও দুই সন্তান হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। মাত্র ২৪ ঘন্টায় হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পাথরের শিলসহ আলামত উদ্ধার করে। সোমবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল। গ্রেফতারকৃত আসামি মোঃ আইয়ুব আলী সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার মোকছেদ মোল্লার পুত্র। এছাড়াও তিনি সম্পর্কে নিহত রওশন আরার সৎ ভাগ্নে।
ঘটনার তিন দিন পর পহেলা অক্টোবর বিকেলে নিজ ঘর থেকে সুলতান আলীর স্ত্রী রওশন আরা ও তার দুই শিশু সন্তান মাহিন ও জিহাদের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঐ রাতেই নিহতের ভাই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে বেলকুচি থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে হত্যাকারি আইয়ুব আলী জেলার বেলকুচি উপজেলার মভুপুর গ্রামে তার সৎ খালা রওশন আরার বাড়িতে আসে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহন করা তাঁত শ্রমিক আইয়ুব আলী নিহত রওশন আরার নিকট টাকা ধার চান। টাকা ধার না পেয়ে গভীর রাতে রওশন আরার ঘরে থাকা চারটি ট্রাংক খুলে টাকা চুরির জন্য খোঁজাখুজি করার সময় রওশন আরা বুঝতে পারাতে তার বুকে শিল পাথর দিয়ে আঘাত করে ঘাতক, এরপর গলাটিপে তাকে হত্যা করে। রওশন আরার পাশে ঘুমিয়ে থাকা তার তিন বছরের শিশু সন্তান মাহিন কান্নাকাটি শুরু করলে তাকেও গলাটিপে হত্যা করে আইয়ুব। এসময় রওশন আরার অপর সন্তান জিহাদ জেগে উঠলে তাকেও গলাটিপে হত্যা করে ঘরের দরজায় শিকল লাগিয়ে পালিয়ে যায় ঘাতক আইয়ুব।
মামলা দায়েরের পর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও বেলকুচি থানা পুলিশ চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাবহারের মাধ্যমে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোঃ জুলহাজ উদ্দিন, উপ-পরিদর্শক ওয়াদুদ আলী, সহকারি উপ-পরিদর্শক মোঃ মিন্টু মিয়ার নেতৃত্বে একটি টিম রবিবার রাত সোয়া ১২ টার দিকে উল্লাপাড়া উপজেলার নন্দিগাতি গ্রাম থেকে হত্যাকারি আইয়ুব আলীকে গ্রেফতার করেন। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তিতে আলামত উদ্ধার করেন।
পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) বলেন, হত্যাকারী আইয়ুব আলীকে আদালতে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।