ফারুক হোসেন
রাজশাহী ব্যুরো প্রধান:
ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালককে খুনের ঘটনায় রাজশাহী জেলা পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত মো: আরিফুল ইসলাম বিজ্ঞ আদালতে হাজির হয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। এর পূর্বে অভিযুক্ত আরিফুল ইসলামকে তিনদিনের রিমান্ড শেষে রাজশাহীর বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।
খুনের ঘটনায় নিহতের পিতা মো: রেজাউল করিম গোদাগাড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে বলা হয়, গত ২৭ অক্টোবর ২০২৩ খ্রি. রাত ০৯:৩০ টা হতে ২৮ অক্টোবর ২০২৩ খ্রি. ভোর ০৬:০০ টায় তার পূত্র অটোভ্যান চালক রিয়াজুল ইসলামকে অজ্ঞাতানামা ব্যক্তি মাথায় গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে হত্যা করে। এরপর নিহতের লাশ গোদাগাড়ী থানাধীন কাঁকনহাটের মহদেবপুর গ্রামের একটি বাঁশঝারে ঝুলন্ত অবস্থায় রেখে অটোভ্যানটি নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় রাজশাহী-সহ সমগ্র দেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দস্যুতা-সহ এ খুনের ঘটনা উদঘাটনে রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) সনাতন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে জেলার গোদাগাড়ী থানা পুলিশ এবং ডিবির একটি চৌকস টিম রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানে সম্মিলিত অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের এক পর্যায়ে গত ২৮ অক্টোবর ২০২৩ খ্রি. অভিযুক্ত মো: আরিফুল ইসলাম-কে রাজশাহী মহানগরের উপশহর হতে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে, রাজশাহী মহানগরে তার এক আত্মীয়ের বাড়ি হতে অটোভ্যানের ৫ টি ব্যাটারি উদ্ধার করে পুলিশ। তা ছাড়া এ খুনের ঘটনায় অন্যান্য অভিযুক্ত সজিব হোসেন এবং মো: শাকিল আহম্মেদ-কে রাজশাহীর বিভিন্নস্থান হতে গ্রেফতার করে পুলিশ।
অভিযুক্ত মো: আরিফুল ইসলামের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ভিকটিম রিয়াজুলের অটোভ্যানের ব্যাটারির জন্য তাকে তারা ঘুমের ঔষুধ খাইয়ে দেন। ঘুম ভাঙ্গার পর মহদেবপুর গ্রামের বাঁশঝাড়ে কেনো নিয়ে আসা হয়েছে এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলে অভিযুক্ত শাকিল পেছন থেকে রিয়াজুলের মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে এবং সজিব ও শাকিলের সহায়তায় আরিফুল দড়ি দিয়ে রিয়াজুলের গলায় ফাঁস দেয়। সজিব হাতুড়ি দিয়ে রিয়াজুলের মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
সাক্ষ্য ধ্বংশ করার অভিপ্রায়ে তারা রিয়াজুলের ফোন ভেঙ্গে নর্দমায় ফেলে দেয়। এরপর তারা মৃত রিয়াজুলের অটোভ্যান নিয়ে রাজশাহী মহানগরের দামকুড়ায় চলে যায়।
উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত সজিব হোসেন (২৪) রাজশাহী মহানগর পবা থানার কুমড়াপুকুর গ্রামের মো: গাজীমুদ্দিনের পুত্র, মো: আরিফুল ইসলাম (২২) দামকুড়া থানার বাথানবাড়ি তালপাড়া গ্রামের মৃত আয়েনুদ্দিন শেখ কালুর পুত্র এবং মো: শাকিল আহম্মেদ (২২) একই জেলার পবা থানার বেজুরা গ্রামের মো: গাজীমুদ্দীনের পুত্র।