মোঃ আবু তাহের নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ী ডিগ্রী কলেজের সেই আলোচিত অধ্যক্ষ সেলিম রেজাসহ অপর এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে।
রাজশাহী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ৫ জুলাই শুনানি শেষে মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি বরাবর গ্রেপ্তারি ওয়ারেন্ট পত্র জারি করে।
জানা গেছে, গত ২০২২ সালের ৮ নভেম্বর একই কলেজের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন বিভাগের প্রভাষক আহাদুজ্জামান নাজিম আদালতে অধ্যক্ষ সেলিম রেজা ও সহকারি অধ্যাপক ওমর কোরাইশির বিরুদ্ধে ৫ লাখ টাকার চাঁদা দাবি ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করে।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে রাজশাহী মেট্রো ও জেলা সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করে। মামলার তদকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আনিছুর রহমান ঘটনার সত্যতা প্রাথমিক ভাবে প্রমানিত হওয়ায় গত ৩০ মে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তদন্তে মামলার স্বাক্ষীদের সাথে কথা বলে মামলায় উল্লেখিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা তুলে ধরে জবানবন্দি লিখত আকারে পেশ করে। এছাড়াও তদন্তকারী কর্মকর্তা আনিছুর রহমান তার মতামতে উল্লেখ করেন, আলোচ্য মামলাটি সার্বিক তদন্তে প্রান্ত সাক্ষ্য প্রমাণ, বাদী ও বিবাদীর মোবাইলের সিডিআর পর্যালোচনা, উদ্ধারকৃত তিনটি স্ট্যাম্প পর্যালোচনা এবং ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায়, প্রতীয়মান হয় যে, মামলার বিবাদী সেলিম রেজা বাদিসহ কলেজের শিক্ষক কর্মচারীর বেতন হতে প্রতি মাসে চাকুরীচ্যুতির ভয়ভীতি দেখাইয়া ৩% হারে।
জোরপূর্বক চাঁদা কর্তন করলে বাদি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় বাদির প্রতি আসামি সেলিম রেজা ক্ষিপ্ত ছিল। এজন্য সুযোগ পেয়ে বাদীর বিরুদ্ধে মামলার অজুহাতে সাময়িক বরখাস্ত করে রাখে এবং সাময়িক বরখাস্তের আদেশ তুলে নেওয়ার কথা বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসামি ওমর কোরাইশির সহায়তায় তিনটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে সহি নেয় কিন্তু সাময়িক বরখাস্ত আদেশ না তুলে বাদির নিকট ৫ লাখ টাকা দাবি করে। বাদি টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামি সেলিম রেজা বাদিকে লাথি মেরে ফেলে দেয় এবং টাকা না পেয়ে ফাঁকা স্ট্যাম্প তিনটি ব্যাক ডেট দিয়ে এফিডেভিটে পরিণত করে।
মামলাটি তদন্ত ও সাক্ষ্য প্রমাণে আরজি বর্ণিত আসামিদ্বয়ের বিরুদ্ধে ৩২৩/৩৮৫/৩৮৬/৪২০/১০৯ পেনাল কোড ধারার অভিযোগসহ ২০২০ সালে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলআপের ৫/৬ (পাঁচ) ছয়) লক্ষ টাকা ফেরত না দিয়ে আত্মসাৎ এবং কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন, পরীক্ষার ফিসহ যাবতীয় টাকা পয়সা আদায় করে কোন শিক্ষক কর্মচারীকে তা থেকে ভাতা না দিয়ে তছরুপ করায় ৪০৮ পেনাল কোড ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।
তদন্তে আসামি সেলিম রেজা (৫১ও ওমর কোরাইশীর বিরুদ্ধে ১০৯/৩২৩/৩৬৫/৩৮৬/০৮/২০ পেনাল কোড ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এই বিষয়ে কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, আদালত থেকে ওয়ারেন্ট জারি হলে আসামী আটকের স্বার্থে তা জানানো হয় না।
এর আগে রাজাবাড়ী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ উঠে। এছাড়াও ২০২২ সালের ৭ জুলাই রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বেধড়ক পেটান ।
এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে ঘটনার সত্যতা প্রমাণ পাই।
তবে সেই সময় এমপির পাশে বসে সাংবাদিক সম্মেলন করে এমপি তাকে পেটায়নি বলেদাবি করে। এতে করে প্রচুর সমালোচনার সৃষ্টি হয়