শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন
ঘোষনা
রাজৈরে মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রাজধানীর মিরপুরে দর্জিকে কুপিয়ে হত্যা ইস্টার্ন হাউজিং,রূপনগর থানা, ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে সরিষাবাড়ীতে শফিকুলকের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও নির্যাতনের অভিযোগ: ভুক্তভোগীদের বিচার প্রার্থনা সাবেক স্ত্রীর আটটি মামলায় জর্জরিত স্বামী ও তার প‌রিবার এতিমদের সম্মানে ঢাকা প্রেস ক্লাবের পরিবারের পক্ষ থেকে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা টিটিসিতে ভর্তি পরীক্ষায় দুর্নীতি বাতিলের দাবি স্থানীয়দের সাতক্ষীরায় শিশু ও নারী সহিংসতার প্রতিবাদে মানববন্ধন চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভূয়া ডিবি পুলিশকে জনতার গণধোলাই  গোমস্তাপুরে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি প্রনোদনা বিতরণ

নেদারল্যান্ডে যাওয়া হলোনা জাতীয় যুব পুরষ্কার প্রাপ্ত উদ্যোক্তা সোহেলের

জুল‌ফিকার আলী সম্রাট, নওগাঁ জেলা ব‌্যু‌রো প্রধান :
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০২২
  • ২৪০ বার পঠিত

নওগার সাপাহার উপজেলার তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সোহেল রানা। ২০২১ সালে সফল কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জাতীয় যুব পুরষ্কার লাভ করেন তিনি। ইউরোপের নেদারল্যান্ডে আম মেলায় যাওয়ার কথা ছিল সোহেলের। কিন্তু বৃহস্পতিবার (৫ আগষ্ট) কাতার এয়ারের কর্মকর্তরা আপত্তিকর ও অন্যায় অভিযোগের কারণে নেদারল্যান্ডে যাওয়া হলো না সোহেলের।
সোহেল রানা নওগাঁর সাপাহার উপজেলার গোডাউনপাড়া গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা। তার ১০৫ বিঘা বাগানে রয়েছে দেশি-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির আম। এছাড়াও পত্নীতলা উপজেলার রূপগ্রাম এলাকায় সোহেল রানার ৪০ বিঘা জমির আরেকটি আমবাগান রয়েছে বলে জানা গেছে।
সোহেল রানা জানান, তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। চাকুরীও করেন বেশ কিছুদিন। পরে চাকরি ছেড়ে ২০১৫ সালে শুরু করেন “বরেন্দ্র এগ্রোপার্ক” নামে কৃষি খামার। সেখানে বিভিন্ন জাতের দেশী-বিদেশী কৃষিজ পণ্য উৎপাদন শুরু করেন তিনি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো আম চাষ। ২০২১ সালে সফল কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জাতীয় যুব পুরষ্কার লাভ করেন। গত ২ বছর থেকে থেকে গ্লোবাল জিপিএ মেনে আম উৎপাদন করেন। আর সেই আম ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনছেন।’
নেদারল্যান্ড মেলায় যাওয়া নিয়ে কি ঘটেছিলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,“ভিসা ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের জিআরসহ প্রয়োজনীয় সব কাগজ যাছাই-বাছাই করে ভ্রমণের অনুমতি দিয়েছিল বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশ। বিমানে ওঠার আগে কাতার এয়ারওয়েজের লোকজন অভিযোগ করেন যে, আমার ভিসা জাল। ভিসা জালের কথা শুনে আমি ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে ছুটে আসি। তারা পুনরায় যাছাই-বাছাই করেন। পরে ভিসা ঠিক থাকায় আমাকে ভ্রমণের অনুমতি দিতে কাতার এয়ারওয়েজকে অনুরোধ করে। কিন্তু তারা না শুনে আমাকে ফেরত পাঠায়।”
ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে সম্ভাবনাময় তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সোহেল রানা আরো বলেন,“ আমি কাতার এয়ার ওয়েজে ৫ আগষ্ট ঢাকা-আমস্টারডাম টিকেট করি। ফ্লাইট ছিল ভোর সাড়ে ৪ টায়। ৪ আগষ্ট রাত পৌনে ১২ টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ নং টার্মিনাল দিয়ে প্রবেশ করি। এরপর বোর্ডিং পাস দেয়া শুরু হলে পাসপোর্ট, টিকেট, ভ্যাকসিন কার্ডসহ প্রয়োজনীয় কাগজ দেখিয়ে বোর্ডিং পাস সংগ্রহ করি এবং লাগেজ জমা দিয়ে ইমিগ্রেশনে যাই। ইমিগ্রশেনে পাসপোর্ট, বোর্ডিং পাস, জিও কপিসহ সব ডকুমেন্ট জমা দিয়ে ইমিগ্রেশন সম্পূর্ণ করি। এরপর বিমানে উঠবার জন্য ৫ নং গেটে অপেক্ষা করতে থাকি। নির্দিষ্ট সময়ে লাইনে দাঁড়িয়ে গেট পার হবার সময় কাতার এয়ার ওয়েজের দায়িত্বরত স্টাফ আমার পাসপোর্ট দেখে ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ করে। এসময় আমার পাসপোর্ট, বোর্ডিং পাস রেখে দিয়ে পাশে দাঁড়াতে বলেন। আমি তাকে জিও কপি, এলওআই, রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্তির কথা বলি।এছাড়াও আরও বলি আমি নিজ হাতে ভিসা পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছি।এখানে জালিয়াতির কোন সুযোগ নাই। এরপর ওই কর্মকর্তা শত শত যাত্রীর সামনে আমার সঙ্গে খারপ আচরণ করেন। আমি দ্রুত ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে গিয়ে ঘটনা বলি। আমার ইমিগ্রেশন করা কর্মকর্তা এসআই দেলোয়ার আমাকে নিয়ে কাতার এয়ারের কর্মকর্তার কাছে যান। পরে আমার পাসপোর্ট ও আমার যাবতীয় ডকুমেন্ট সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দরের ভিসা বিশেষজ্ঞ টিমের মাধ্যমে পুনরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভিসা সঠিক বলে মত দেয়। এরপর বিমান ছাড়ার আগে এসআই আমাকে সঙ্গে নিয়ে ৫ নং গেটে কাতার এয়ারের স্টাফের কাছে ভিসা সঠিক বলে জানান এবং আমার বিমানে যাত্রার জন্য অনুরোধ করেন। কাতার এয়ারের কর্মকর্তাকে রাষ্ট্রীয় জিও, এলওআই, জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্তি, গণমাধ্যমে নানা প্রতিবেদনসব কিছু বলেন। এসব দেখে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কাতার এয়ার বিমান যাত্রা নাকচ করে বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন ইনচার্জ বরাবর প্যাসেঞ্জার অফলোডের জন্য আবেদন করেন। এরমধ্যে আমার ফ্লাইট ফ্লাই করে চলে যায়। ইমিগ্রেশন পুলিশ বহু চেষ্টা করে ব্যর্থ হবার পর কাতার এয়ারের আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি জিডি করে আমার পাসপোর্টে ইমিগ্রেশন সিল বাতিল করেন। কাতার এয়ারের কর্মকর্তরা আপত্তিকর ও অন্যায় অভিযোগ তুলে আমাকে বিমানে উঠতে দেননি। কিন্তু বোর্ডিং কার্ড এবং ইমিগ্রেশন ছাড়পত্র শেষে একজন আন্তর্জাতিক যাত্রীর সাথে এ ধরনের ঘৃণ্য আচরণ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। ইমিগ্রেশন আইন, আমার রাষ্ট্রীয় পুরষ্কার, মন্ত্রণালয়ের জিও, এলওআই, গণমাধ্যমের নানা প্রতিবেদন সব কিছুকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে আমার সঙ্গে কাতার এয়ার ওয়েজের এমন জঘন্য, নিন্দনীয় কাজের জন্য আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাই। বিমানে উঠবার আগে যাত্রা বাতিল করে কাতার এয়ার ওয়েজ আমার মান সম্মান হানির পাশাপাশি বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতি, ইউরোপের অনেক বায়ারদের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত মিটিং বাতিল হয়েছে। যা আম রপ্তানিসম্পর্কিত ছিলো। ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ করায় আমাদের রাষ্ট্রীয় সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। আমি কাতার এয়ার ওয়েজের নিকট ক্ষতিপূরণ সহ এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই। এই বিষয়ে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিব।” পাশাপাশি এই বিষয়ে নেদারল্যান্ডস অ্যাম্বাসির কাছে অভিযোগ করব বলেও জানান তিনি।
কাতার এয়ার ওয়েজের এমন জঘন্য, নিন্দনীয় কাজে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার সচেতন মহল। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে এহেন ন্যাক্কারজনক কাজের সুবিচার চেয়েছেন এলাকার অভিজ্ঞমহল।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
Developed By Bangla Webs
banglawebs999991